সর্বশেষঃ
সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে আজ হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে দীপু মনির সুপারিশে মাউশিতে তিন হাজার পদায়ন অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের জবাবে তানজিন তিশার বিবৃতি পুরুষ বাউলদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ, ডাকার নামে কুপ্রস্তাবের দাবি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন জনপ্রিয় টিকটকার ববি গ্রেভস নায়িকা পপি কে আইনী নোটিশ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর পর প্রথমবার মুখ খুললো হেমা মালিনী দক্ষিণ আফ্রিকা ২৫ বছর পর ভারতের মাটিতে সিরিজ জয় নিয়ে ইতিহাস গড়ল শোয়েব আখতার হলেন বিপিএলের নতুন ঢাকা ক্যাপিটালসের মেন্টর শামীমের বাদ দেওয়ার বিষয়টি আমাকে জানাননি লিটন, অভিযোগ বাংলাদেশের বাজিমাৎ: শ্রীলঙ্কাকে ৫-০ গোলে হারালো তরুণ দল বিপিএলের আসর শুরু হবে ১৯ ডিসেম্বর, ফাইনাল ১৬ জানুয়ারি
পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের বোর্ড বাতিলের মাধ্যমে গ্রাহকসেবায় কোনো বিঘ্ন ঘটবেনা

পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের বোর্ড বাতিলের মাধ্যমে গ্রাহকসেবায় কোনো বিঘ্ন ঘটবেনা

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, পাঁচ শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকের বোর্ড বাতিল হলেও গ্রাহকসেবা পর্যায়ে কোনো বিঘ্ন ঘটে না। এসব ব্যাংকের পেমেন্ট, রেমিট্যান্স, এলসিসহ অন্যান্য ব্যাংকিং কার্যক্রম আগের মতোই অব্যাহত থাকবে। বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর এ বিষয়ে এসব কথা বলেন।

তিনি আরও জানান, যদিও বোর্ড ভেঙে গেছে, তবে ব্যাংকগুলোর দৈনন্দিন কার্যক্রম বন্ধ হবে না। ব্যবসা কার্যক্রম চলমান থাকবে এবং পেমেন্ট, রেমিট্যান্স, এলসি সবই স্বাভাবিকভাবে চলবে। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো, ব্যাংকগুলোকে ধারাবাহিক পরিচালনা নিশ্চিত করা এবং ধাপে ধাপে পাঁচ ব্যাংকের সম্পদ এবং আইটি সিস্টেমের একীভূতকরণ সম্পন্ন করা।

গভর্নর উল্লেখ করেন, এই পাঁচ ব্যাংকের মোট ৭৫০টি শাখা এবং প্রায় ৭৫ লাখ আমানতকারী রয়েছে। লিকুইডেশন এড়াতে তাদের স্বার্থ রক্ষার্থে প্রথমে কাঠামোগত ও প্রযুক্তিগতভাবে ব্যাংকগুলোকে একত্রিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘নন-ভায়েবল’ বা টেকসই নয় বলে ঘোষিত এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের মধ্যে অস্থায়ী অ্যাডমিনিস্ট্রেটর নিয়োগ করা হয়েছে। সকাল থেকেই এসব ব্যাংকের কোম্পানি সেক্রেটারিকে ‘নন-ভায়েবিলিটি’ নোটিশ পাঠানো হয়েছে, যার মাধ্যমে বোর্ডের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে এবং তারা আর কোনো নতুন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।

তিনি আরো জানান, দেশের সবচেয়ে বড় ইসলামী ব্যাংক হিসেবে পাঁচটি মিলেই গড়ে উঠবে নতুন প্রতিষ্ঠিত ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’। এই ব্যাংকের পেইড-অ্যাপ ক্যাপিটাল হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের সব ব্যাংকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এটি সরকারি মালিকানাধীন হলেও পরিচালনা হবে একেবারে বেসরকারি ব্যাংকের মতো। পেশাদার ব্যবস্থাপনা, বাজারভিত্তিক বেতন কাঠামো, এবং পৃথক শরিয়াহ বোর্ড গঠন করা হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

গভর্নর বলেন, ইসলামিক ব্যাংকিং বাংলাদেশে ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ।

শেয়ারহোল্ডারদের বিষয়ে তিনি বলেন, শেয়ারমূল্য এখন নেগেটিভ হওয়ায় শেয়ারগুলোকে জিরো মনে করা হবে এবং কাউকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না।

অতিরিক্তভাবে, জনসাধারণকে তিনি আশ্বস্ত করেন যে, দুই লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতকারী পুরো অর্থ তুলে নিতে পারবেন। বড় অংকের আমানতের জন্য ধাপে ধাপে উত্তোলনের সুবিধা থাকবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানানো হবে। তবে সকলকে উত্সাহিত করে বলা হয়, অপ্রয়োজনীয় অর্থ তোলার প্রয়োজন নেই—শুধুমাত্র প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থ উত্তোলন করুন।

নির্বাচনপরবর্তী পরিবর্তনের ধারায় বা নতুন সরকারের অধীনে এই প্রক্রিয়া বন্ধের কোনো সম্ভাবনা রয়েছে কি-না—এমন প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর জানান, দেশের স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং পরিবর্তন আসলেও এই সিদ্ধান্ত বজায় থাকবে।

অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার্থে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বুধবার পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংককে অকার্যকর ঘোষণা করেছে। এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং এ সকল ব্যাংককে একীভূত করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কার্যক্রম চালাচ্ছে। এর মাধ্যমে একটি নতুন সরকারি মালিকানাধীন ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হবে, যার নাম ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’।

ওই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আজ এসব ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলোকে অ্যালার্ট করে জানানো হয়েছে যে, আগামী ৫ নভেম্বর থেকেই পরিচালনা পর্ষদ কার্যক্রম বন্ধ থাকবে এবং তারা ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের অধীনে পরিচালিত হবে।

এদিকে, ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের জরুরি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা পরিস্থিতি বুঝতে পারে এবং নতুন পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নে প্রস্তুতি নিতে পারে। এর আগে, গত ৯ অক্টোবর সরকারি অনুমোদন নিয়ে এ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছিল, যেখানে দেশের ব্যাংকিং খাতের আর্থিক অবস্থা অবনতির কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এই ব্যাংকগুলো দীর্ঘ সময় ধরে তারল্য সংকট, বিশাল অঙ্কের শ্রেণিকৃত ঋণ, প্রভিশন ঘাটতি ও মূলধন ঘাটতি মোকাবিলা করছে। এর ফলে, এদের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছে। অনেকবার ত্রুটিপূর্ণ পরিস্থিতিের জন্য সাহায্য দেওয়া হলেও, ব্যাংকগুলো কেবল আরও খারাপ হয়ে গেছে; শেয়ারবাজারে তাদের মূল্য কমে গেছে এবং তাদের নেট অ্যাসেট মূল্য অর্থাৎ এনএভি ঋণাত্মক হয়ে আছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Shipon tech bd